ফটোগ্রাফি করে অনলাইনে ছবি বিক্রির মাধ্যমে অনলাইনে আয় করার জন্য ফটোগ্রাফারদের এখন অনেক সুযোগ রয়েছে। আপনি ফটোগ্রাফির যে কাজটি সখের বশে করছেন, আপনি চাইলে আপনার সখ মেঠানোর পাশপাশি অনলাইনে ছবি বিক্রি করে মোটামুটি ভালো অংকের টাকা ইনকাম করে নিতে পারেন। সবচাইতে মজার বিষয় হচ্ছে ফটোগ্রাফি করে আয় করার জন্য তেমন কোন অভীজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। আপনার একটি ডিএসএলআর থাকলে এবং টুকটাক ফটো এডিটিং এর কাজ জানলে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আপনার তুলা ভালোমানের ছবিগুলো বিক্রি করতে পারবেন।


আসলে ফটোগ্রাফি বেশ সখের একটি কাজ। আমরা প্রায় প্রতিদিন এখন সখের বশে বিভিন্ন ধরনের ছবি তুলে সেগুলো ফেসবুক ও ইনস্ট্রগামে আপলোড করি। কিন্তু সেখান থেকে আমাদের কোন বেনিফিট হয় না। অথচ আপনার একটি ডিএসএলআর থাকলে নিজের ছবি তুলার পাশাপাশি প্রকৃতির বিভিন্ন দৃশ্য সহ আরো বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় জিনিসগুলো নিয়ে ফটোগ্রাফি করে খুব সহজে অনলাইনে ছবি বিক্রি করতে পারেন।


আমরা আজকের পোস্টে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে অনলাইনে টাকা আয়ের বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আপনি যদি একজন ফটোগ্রাফার হন বা ছবি তুলতে পছন্দ করেন, তাহলে আপনি কোন্ ধরনে ছবি তুললে আয় করতে পারবেন, কোন্ কোন্ জায়গাতে ছবি বিক্রি করতে পারবেন, ছবি বিক্রি করার জন্য কি কি করতে হবে এবং ছবি বিক্রি করে কত টাকা আয় করতে পারবেন, ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করব।

কিভাবে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করবেন?

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার জন্য আপনাকে কোন বায়ার খুঁজতে হবে না। আপনার কাছে ভালোমানের ছবি থাকলে সেগুলো ঘরে বসে অনলাইনের বিভিন্ন ছবি শেয়ারিং মার্কেটপ্লেস বা স্টক ইমেজ সাইটগুলোতে আপলোড করে ছবি বিক্রি করতে পারবেন।


এ ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে কোন একটি বা দুটি স্টক ইমেজ মার্কেটপ্লেসে একটি ফ্রি একাউন্ট তৈরি করে সেখানে আপনার ভালোমানের কয়েকটি ছবি আপলোড করতে হবে। ছবি আপলোড করার পর ওয়েবসাইট হতে আপনার ছবিগুলোর কোয়ালিটি, পিক্সেল ও আনুষাঙ্গিক বিষয় যাচাই করার পর তাদের কাছে ভালো মনেহলে, তারা আপনার প্রোফাইল অনুমোদন করবে। আপনার প্রোফাইল অনুমোদন হলে তখন আপনি ছবি আপলোড করতে পারবেন।


আরো বিষয়ে জানতে এগুলো পড়ুন - 
ছবি আপলোড করার সাথে সাথে লোকজন আপনার ছবি দেখতে বা কিনতে পারবে না। কারণ ছবি আপলোড করার পর প্রথমে স্টাক ইমেজ সাইট হতে আপনার আপলোড করার প্রত্যেকটি ছবি যাচাই করা হবে। যাচাই করার পর ছবি ভালো হলে তারা অবশ্যই আপনার ছবি অনুমোদন করে নিবে। অনুমোদন হওয়ার পর তখন আপনার ছবি সবাই দেখতে পাবে এবং কারো পছন্দ হলে ছবি ক্রয় করে নিবে। এ ক্ষেত্রে বিক্রয়কৃত ছবি হতে আপনি কমিশন আকারে কিছু টাকা পাবেন। এভাবে মূলত অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করা হয়। এ বিষয়ে নিচে আমরা আরো বিস্তারিত আলোচনা করব।

কোন ধরনের ছবি তুলবেন?

ফটোগ্রাফি মাধ্যমে অনলাইনে আয় করার জন্য কিছু ক্যাটাগরির ছবি রয়েছে যেগুলোর ডিমান্ড অনেক বেশি। আপনাকে সব ধরনের ছবি না তুলে কিছু নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ছবি নিয়ে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিচের ক্যাটাগরির ছবি নিয়ে ফটোগ্রাফি করতে পারেন।

১। এবস্ট্রাক্ট

এবস্ট্রাক্ট ফটোগ্রাফি
এটা এক ধরনের ক্লোজ ফটোগ্রাফি। সাধারণত খুব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে এ ধরনের ফটোগ্রাফাররা কাজ করে। যেমন- নিচের পাতাটি দেখুন। এই চিত্রের পাতার মধ্যে থাকা শিরা উপশিরা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। খুব ভালোমানের ডিএসএলআর দিয়ে জুম করে এ ধরনের ছবি তুলতে হয়।

২। আর্ট - চিত্রাঙ্কন

বিভিন্ন ধরনের মিউজিয়ামে গেলে অনেক সুন্দর সুন্দর হাতে আকা ছবি পাওয়া যায়। এ ধরনের আর্ট করা ছবি দেখতে বেশ এট্রাকটিভ হয়। এই টাইপের ছবির প্রতি মানুষের আলাদা একটা ফিলিংস থাকে। আপনি বিভিন্ন ধরনের আর্ট করা ছবিগুলো আপনার ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করে কাজটি করতে পারেন।

৩। ফ্যাশন 

ফটোগ্রাফিতে ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়টি বেশ জনপ্রিয়। অনলাাইন ও অফলাইন উভয় মার্কেটে এ ধরনের ফটোগ্রাফারদের অনেক ডিমান্ড রয়েছে। বিভিন্ন নামকরা মডেল ও অভিনয় শিল্পিদের ছবি তুলে সেগুলো অনলাইনে সাবমিট করতে পারেন। তাছাড়া বিভিন্ন ফ্যাশন ডিজাইনের ফটোগ্রাফার হয়েও বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে টাকা আয় করতে পারেন।

৪। নেচার বা প্রকৃতি

প্রকৃতির প্রতি সকল মানুষের টান রয়েছে। এ ধরনের ছবিগুলো অনলাইনে বেশি পরিমানে বিক্রি হয়ে থাকে। বিশেষকরে আমাদের দেশ নদী মাতৃক চিরসবুজের দেশ হওয়ার কারনে প্রকৃতি নিয়ে ফটোগ্রাফাররা খুব সহজে কাজ করতে পারেন। কারণ হাতের কাছে প্রকৃতির দৃশ্য ও পাখপাখালি পেয়ে যাওয়ার কারনে ছবি তুলার জন্য খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না।

৫। ট্রাভেল বা ভ্রমন

যারা ভ্রমন প্রিয় লোক তারা এই কাজটি খুব সহজে করতে পারবেন। আপনি দেশ বিদেশর বিভিন্ন জায়গাতে ভ্রমন করার সময় সুন্দর সুন্দর জায়গাগুলোর দৃশ্য আপনার ক্যামের তুলে রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দর্শণীয় স্থানের ছবি ভালোকরে তুলতে পারলে অনলাইনে সহজে বিক্রি করা যায়।

৬। ফুড (খাবার)

এটাও খুব সহজ কাজ। আমরা প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন হোটেল ও রেষ্টুরেন্টে খওয়ার সময় সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড করি। আপনি এ ধরনের বিভিন্ন দেশি বেদেশি আনকমন খাবারের ছবি তুলে সেগুলো অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন।

৭। ব্যবসা

বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজন কিভাবে কাজ করে বা তাদের কাজের গুরুত্বপূর্ণ কোন মহুর্তের ছবি তুলে কাজটি করতে পারেন। যেমন- ধরুন ব্যবসায়িরা কি ধরনের মিটিং করছেন, তারা কিভাবে চলছে, অফিস ম্যানেজমেন্ট সহ ব্যবসা সংক্রান্ত আরো বিভিন্ন বিষয়ে ফটোগ্রাফি করতে পারেন।

৮। কালচার ও লাইফস্টাইল

বিশ্বের এক এক দেশের মানুষের কালচার, সংস্কৃতি, চলাফেরা ও জীবন ব্যবস্থা এক এক ধরনের। আপনি দেশ বিদেশে ভ্রমন করে থাকলে বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা নিয়ে ফটোগ্রাফি করতে পারেন। এ ধরনের ছবিগুলো মানুষ দেখতে এবং সংগ্রহ করে রাখতে খুব পছন্দ করে।

৯। ভালোবাসা

ভালোবাসা ও আবেগপূর্ণ ছবি মানুষকে সবসময় আকৃষ্ট করে। ছবিতে মানুষের আবেগ, অনুভূতি ও ভালোবাসা ফুটে উঠে এমন মুহুর্তের ছবি তুলতে পারলে সেগুলো আপনি খুব সহজে অনলাইনে বিক্রি করে ভালোমানের টাকা আয় করে নিতে পারবেন। উদাহরণ হিসেবে রানাপ্লাজা ধসে পড়ার পর সেই নারী ও পুরুষের আলিঙ্গনের ছবিটি অনুসরণ করতে পারেন।

১০। বিনোদন

বিনোদন পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কম আছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে অনেক ভালো ভালো মার্কেটে গেলে বিভিন্ন বিনোদন মূলক ছবি টানানো দেখা যায়। এ ধরনের ছবিগুলো অনলাইন হতে ক্রয় করার পর ব্যবসায়িরা প্রিন্ট করে মার্কেটে বিক্রি করে থাকেন। আপনি বিনোদনমূলক ছবি নিয়ে ফটোগ্রাফি করতে পারেন।

অনলাইনে কারা ছবি কিনে?

এতক্ষণ আমি বিভিন্ন ধরনের ছবি নিয়ে আলোচন করলাম, কিন্তু আপনার মাথায় নিশ্চয় একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে যে, এই সমস্ত ছবি কিনে কারা। যেহেতু গুগলে অসংখ্য ছবি পাওয়া যাচ্ছে, তাহলে মানুষ সেগুলো ব্যবহার না করে আমার ছবি অনলাইন হতে কিনবে কেন?

আসলে উন্নতমানের কোম্পানি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো কখনো অন্যের ছবি কমার্শিয়াল কাজে ব্যবহার করে না। কারণ অন্যের ছবি ব্যবহার করলে প্রতিষ্ঠানের ভ্যালু এমনিতেই কমে যায়। সেই জন্য উন্নতমানের কোম্পানিগুলো অনলাইন মার্কেটপ্লেস হতে ভালোমানের ইউনিক ছবি কিনে তাদের কাজে ব্যবহার করে। 

তাছাড়া উন্নত দেশের মানুষ আমাদের দেশের মত যেকোন ধরনের কপিরাইট ছবি ব্যবহার করতে পারে না। কারণ উন্নত দেশের কপিরাইট আইন খুবই কঠোর। সামাণ্য একটি কপিরাইট ছবি ব্যবহার করার জন্য অনেক টাকা জরিমানা হতে পারে। আমরা গুগল হতে বিভিন্ন ছবি যেভাবে ব্লগ ও ওয়েবসাইটে ব্যবহার করি উন্নত দেশের মানুষ সেটা করতে পারে না। কারণ ছবির প্রকৃত মালিক ব্লগ বা ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে মামলা করলে অনেক টাকা জরিমান গুনতে হয়। সে জন্য উন্নত দেশের মানুষ, গুগল হতে ছবি ব্যবহার না করে কিনে ব্যবহার করে।

অনলাাইনে ছবি বিক্রি করে কত টাকা আয় করা যায়?

আপনার ছবি বিক্রি করে কমিশন ভিত্তিক টাকা আয় করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি প্রত্যেকটি ছবি যে দামে বিক্রি হবে সেই পুরো টাকা আপনি নিজে পাবেন না। আপনি যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ছবি বিক্রি করবেন সেই ওয়েবসােইট আপনার ছবি বিক্রির ৬০-৭০% টাকা রেখে দেবে এবং আপনাকে অবশিষ্ট টাকা দেবে।

আসলে প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের বিভিন্ন সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজের মাধ্যমে ছবি বিক্রি করে থাকে। দৈনিক বা মাসিক ছবির সংখ্যার ওপর প্যাকেজের মূল্য নির্ধারিত হয়। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস বা ওয়েবসাইট ভেদে ছবি বিক্রির ২০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছবির মালিককে সম্মানী হিসেবে দেওয়া হয়। তবে একজন বিক্রেতা যদি একটি নির্দিষ্ট ছবি শুধু একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে বিক্রি করেন, তাহলে বেশি সম্মানী পেতে পারেন, আর যদি একটি নির্দিষ্ট ছবি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিক্রি করেন, তাহলে সম্মানীর পরিমাণ কমে যেতে পারে। সম্মানীর পরিমাণ কম হলেও ছবি বিক্রির পরিমাণ বেশি হলে কোনো নির্দিষ্ট মার্কেটপ্লেস থেকে বেশি আয় করা সম্ভব।

এখানে আরেকটি মজার বিষয় হচ্ছে আপনার একটি ছবি যতবার বিক্রি হবে আপনি ততবার টাকা পাবেন। আপনার কোনো ছবি ১০০ বার বিক্রি হলে, আপনাকে প্রত্যেকটি বিক্রির জন্য হিসাব করে টাকা দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে আপনার ছবির দাম যদি হয় ৫ ডলার এবং ছবিটি ১০০ বার বিক্রি হয়, তাহলে আপনাকে ৩০% করে দেওয়া হলে আপনি ৫ × ৩০% × ১০০ = ১৫০ ডলার আয় করতে পারবেন। এভাবে আপনার প্রোফাইলে হাজার হাজার ছবি থাকলে আপনি মাসে অনেক টাকা ফটোগ্রাফি করে আয় করতে পারবেন। 

ছবি কোথায় বিক্রি করবেন?

এটা সবচাইতে বড় প্রশ্ন। আমি অনেক ভালোমানের ফটোগ্রাফার, আমার কাছে অনেক ছবি, এখন আমি ছবি কোথায় বিক্রি করব? একটু ধের্য ধরুন, আমরা আপনাকে বিশ্বর জনপ্রিয় ৫ টি মার্কেটিপ্লেসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো, যেখানে আপনার ছবি বিক্রি করে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।

১। সাটারস্টক - Shutterstock.Com

সাটারস্টক হচ্ছে বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় ফটোগ্রাফি মার্কেটপ্লেস। তাদের ওয়েবসাইটে প্রতি মাসে প্রায় ৮৫ মিলিয়ন লোক ভিজিট করে। সাটারস্টক প্রায় ১৫ বছর থেকে ডিজিটাল মার্কেটে ছবি বিক্রি করে আসছে। তাদের স্টকে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ছবি, ভিডিও ফুটেজ ও মিউজিক রয়েছে। অনলাইন তাদের মিলয়ন মিলিয়ন কাস্টমার রয়েছে।

আপনি খুব ভালোমানের ফটোগ্রাফার হলে এই মার্কেটপ্লেসে আপনার ছবি আপলোড করে প্রতিমাসে একটি স্মার্ট এমাউন্ট আয় করে নিতে পারবেন। সাটারস্টকের ভাষ্য অনুসারে তারা অনলাইনে ছবি বিক্রি করে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে নিয়েছে। সাধারণত তারা একজন ছবির মালিককে ছবি বিক্রির ২০-৩০% টাকা পরিশোধ করে থাকে।


২। ফটোলিয়া - Fotolia.Com

ফটোলিয়া হচ্ছে অডোবি কোম্পানির একটি ফটোগ্রাফি সাইট। তারা ২০১৯ সালে ফটো মর্কেটপ্লেসটি লঞ্চ করে। এই ওয়েবসাইটটি নামকরা এডোবি কোম্পানির হওয়ার কারনে খুব অল্প সময়ে পুরো বিশ্বে জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিয়েছে। সবচাইতে মজার বিষয় হচ্ছে ফটোলিয়া এখনো নতুন হওয়ার কারনে খুব সহজে ফটো আপলোড করার অনুমোদন পাওয়া যায়।

প্রতিমাসে তাদের ওয়েবসাইটে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন লোক ভিজিট করে। এই ওয়েবসাইটের ফটোগুলো বেশ ভালোমানের হয়ে থাকে এবং এখানে ছবি বিক্রি করতে পারলে বেশ ভালো দাম পাওয়া যায়। আমার মনেহয় জনপ্রিয়তার দিক থেকে এটি খুব অল্প সময়ে সাটারস্টককে ছাড়িয়ে যাবে। কাজেই আপনি চাইলে এখানে আপনার ছবি বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন।

ফটোলিয়া - Fotolia.Com

৩। গেটি ইমেইজ - GettyImages.Com

গেটি ইমেইজ এর ছবির অনেক দাম হয়ে থাকে। আপনি এখানে আপনার প্রোফাইল এপ্রুভ করে ছবি বিক্রি করতে পারলে প্রচুর পরিমানে টাকা আয় করতে পারবেন। তাদের প্রায় ৫০ মিলিয়ন এর বেশি মাসিক ভিজিটর রয়েছে। সাধারণত এই ওয়েবসাইটে নেচার ও ইমোশন টাইপের ছবির বেশি ডিমান্ড হয়। তারা একজন ছবির মালিককে ছবি বিক্রির ২০% কমিশন পে করে থাকে। কমিশন কম হওয়া সত্বেও ছবির দাম বেশি হওয়ার কারনে গেমি ইমেইজ থেকে টাকা বেশি আয় করা সম্ভব হয়।
গেটি ইমেইজ - GettyImages.Com

৪। আইস্টক ফটো - iStockPhoto.Com

আইস্টক ফটো হচ্ছে আরেকটি স্টক ইমেজ শেয়ারিং মার্কেটপ্লেস। এটি মূলত গেটি ইমেজ এর একটি অংশ। গেজি ইমেজ কোম্পানি নিজে এটিকে পরিচালনা করে। তবে এখানে গেজি ইমেজ এর চাইতে খুব সহজে প্রোফাইল অনুমোদন করা সম্ভব হয়। প্রথম অবস্থায় তারা আনাকে তিনটি ইমেজ আপলোড করার অপশন দেবে। পরবর্তী আপনার ছবির কোয়ালিট ভালো হলে আনলিমিটেড ছবি আপলোড করে সেল করার সুযোগ দেবে। সাধারণ আইস্টক ফটো ২০-৪৫% কমিশন ফটো মালিককে পরিশোদ করে থাকে।
আইস্টক ফটো - iStockPhoto.Com

৫। ড্রিমসটাইম - Dreamstime.Com

ফটোগ্রাফি মার্কেট হিসেবে ড্রিমসটাইম এর বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। প্রতিমাসে তাদের প্রায় ২০ মিলিয়নের বেশি ট্রাফিক রয়েছে। ড্রিমসটাইম এর ভাষ্যমতে তারা প্রতিমাসে প্রায় ১ মিলিয়ন ছবি বিক্রি করে। তাদের অধিকাংশ ছবি ইউরোপ ও আমেরিকাতে বিক্রি হয়ে থাকে। সাধারণত ড্রিমসটাইম ছবির মালিককে ছবি বিক্রির ৩০-৪৫% কমিশন পে করে। তাছাড়া এখানেও সহজে প্রোফাইল অনুমোদন পাওয়া যায়।
ড্রিমসটাইম - Dreamstime.Com

কিভাবে স্টক প্রফাইল Approve করবেন?

এতক্ষণ আমরা জানলাম কোন কোন মার্কেটপ্লেসে ছবি আপলোড করে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে অনলাইন হতে আয় করা যায়। কিন্তু বিষয়টি এমন নয়, আপনি ক্যামেরা দিয়ে ছবি উঠালেন এবং সেগুলো আপলোড করেই টাকা আয় শুরু করে দিলেন। উপরের ৫টি মার্কেটপ্লেসের মধ্যে যেকোন মার্কেটপ্লেসে ছবি আপলোড করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ফ্রি একাউন্ট তৈরি করে প্রোফাইল অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। 

প্রোফাইল অনুমোদন করানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই ভালোমানের ছবি আপলোড করতে হবে। আপনার ছবির মান ও ছবির পিক্সেল ভালো হলে তারা অবশ্যই আপনার প্রোফাইল অনুমোদন করবে। অনুমোদন হওয়ার পর ছবি আপলোড করতে পারবেন। আপনার ছবি আপলোড করার পর প্রতিটি ছবি তারা রিভিউ করবে। রিভিউ করার পর ছবি ভালো হলে ছবি অনুমোদন করবে এবং ছবি বিক্রি হলে আপনি টাকা আয় করতে পারবেন।

সাধাণত ছবির মান ভালো না হলে কিংবা ছবিতে কোন ধরনের কপিরাইট মেটারিয়াল থাকলে প্রোফাইল অনুমোদন হয় না। আপনি একজন ভালোমানের ফটোগ্রাফার হলে প্রোফাইল অনুমোদন করা আপনার জন্য খুব একটা কঠিন কাজ হবে না। প্রথমবার অনুমোদন না হলে কিছুদিন পর আরো ভালোমানের ছবি আপলোড করলে তারা অবশ্যই আপনার ছবি অনুমোদন করবে। তনে নরমাল ছবি দিয়ে কখনো প্রোফাইল অনুমোদন করিয়ে নিতে পারবেন না।

শেষ কথা

ফটোগ্রাফিকে শখ হিসেবে নিয়ে কেউ যদি খুব বেশি পরিমানে ছবি তুলে থাকেন, তাহলে উপরের মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে আপনি অনলাইনে ছবি বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারবেন। সেই সাথে আপনি যদি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন, তাহলে অনলাইন ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যম হতে ফটোগ্রাফি করে টাকা আয় করতে পারবেন।

Leave a Comment

নিচে কমেন্ট বক্স এ আপনার মূল্যবান মতামত দিন। যা লেখকের অনুপ্রেরণা জোগাবে ইনশা-আল্লাহ।